ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১১/০৬/২০২৪ ৩:১২ পিএম
সেন্টমার্টিন জেডিঘাট/ ছবি – ওবাইদুল হক চৌধুরী

কক্সবাজারের টেকনাফের নাফনদ ও বঙ্গোপসাগরের মোহনাটি নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্ট নামে পরিচিত। আর সেই নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে অবস্থান নেয় মিয়ানমারের অজ্ঞাত একটি অস্ত্রধারী গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীটি কোনোভাবেই টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে ট্রলার বা স্পিড বোট চলাচল করতে দিচ্ছে না। ওই রুটে ট্রলার বা বোট দেখার সঙ্গে সঙ্গেই গুলি করছে।

টানা ৭ দিন বন্ধ থাকার পর আজ মঙ্গলবার (১১ জুন) টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনগামী পাঁচজন যাত্রী নিয়ে যাওয়া একটি স্পিড বোটকে লক্ষ করে ফের গুলিবর্ষণ করেছে গোষ্ঠীটি। তবে এতে হতাহত না হলে দ্বীপজুড়ে এখন চরম আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। দ্বীপবাসীর খাদ্য সংকট তৈরি হচ্ছে।

মঙ্গলবার গুলি করা স্পিড বোটটির মালিক সেন্টমার্টিন স্পিড বোট মালিক সমবায় সমিতির সভাপতি ও দ্বীপ ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম।

তিনি জানিয়েছেন, চিকিৎসার জন্য জরুরি টেকনাফে আসা পাঁচজন যাত্রীর সেন্টমার্টিন যাওয়ার প্রয়োজন হলে চালক মোহাম্মদ বেলাল সকাল সাড়ে ১০টায় টেকনাফের কায়ুকখালী ঘাট থেকে যাত্রা দেয়। বোটটি শাহপরীরদ্বীপ অতিক্রম করে নাফদের বদরমোকামের গোলগরা পয়েন্টে পৌঁছে। এটি নাইক্ষ্যংদিয়ার বিপরীতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরের অংশ এলাকাটি। কিন্তু এরপরও মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে ট্রলারে অবস্থানরত অস্ত্রধারীরা বাংলাদেশের জলসীমায় এগিয়ে এসে গুলি করে। টানা ১০-১২ রাউন্ডগুলি করা হয়। চালক বেলাল অবস্থা বুঝে স্পিড বোট দ্রুত চালিয়ে পশ্চিমের বঙ্গোপসাগরের দিকে চলে যায়। এতে কেউ হতাহত হয়নি। বোটটি দুপুর ১২টার দিকে দ্বীপে গিয়ে পৌঁছে।’

দ্বীপের এই জনপ্রতিনিধি জানান, কাঠের ট্রলার বা সার্ভিস বোটে যাত্রী বা পণ্য আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি জটিলতা রয়েছে। ট্রলারগুলিকে নাফনদ এবং বঙ্গোপসাগরের নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে এসে মিয়ানমারের কাছাকাছি এলাকা অতিক্রম করতে হয়। এটা করতে গিয়ে ৫ জুন সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার সময় নির্বাচনী সরঞ্জাম ও কর্মকর্তাদের বহনকারী নৌযানে গুলিবর্ষণ করে মিয়ানমার থেকে। এতে ট্রলারটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কেউ হতাহত হননি। এরপর ৮ জুন শনিবারও পণ্যবাহী ট্রলারে আবারও গুলি করে। এতে কেউ হতাহত না হলেও ট্রলারটিতে গুলি লাগে সাতটি। কিন্তু স্পিড বোট অনেক দূর থেকে চলাচল করলেও কেন বাংলাদেশের জলসীমায় এসে গুলি করছেন বুঝা যাচ্ছে না।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মো. আদনান চৌধুরী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, বিষয়টি সব পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন মহলকে অবহিত করা হয়েছে। পরিস্থিতি খুবিই খারাপ। এর পরিপ্রেক্ষিতে দ্বীপে অবস্থানরত মানুষ খাদ্য সংকটে পড়বে। ওই এলাকায় মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী নাকি বিদ্রোহীরা গুলি চালাচ্ছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, টেকনাফের নাফনদ ও বঙ্গোপসাগরের মোহনাটি নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে মিয়ানমারে অবস্থানরত অস্ত্রধারীরা কারা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তারা ট্রলারে অস্ত্র হাতে নাফনদে টহল দিচ্ছে। আর কোনোভাবেই সেন্টমার্টিনগামী ট্রলার বা স্পিড বোট দেখলেই গুলি করতে। মঙ্গলবারের ঘটনার পর দ্বীপজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। সেন্টমাটিন-টেকনাফ যাত্রী ও পণ্যবাহী সব নৌযান চলাচল বন্ধ। যার কারণে দৈনন্দিনের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য সংকট হতে শুরু করেছে। সমাধান না হলে দ্বীপবাসীর অবস্থা খুব সংকটাপন্ন হবে। এ ক্ষেত্রে বঙ্গোপসাগরকে ব্যবহার করে নৌবাহিনী বা কোস্ট গার্ডের জাহাজ যোগে খাদ্যপণ্য নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে ট্রলার ও স্পিড বোটকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হচ্ছে। তাই ওই নৌরুটে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে জরুরি ভিত্তিতে শাহপরীর দ্বীপ অংশ থেকে বিকল্প পদ্ধতিতে বঙ্গোপসাগর হয়ে সেন্টমার্টিন যাওয়া বিষয় চিন্তা করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে গত রবিবার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি সরকারের সর্বোচ্চ মহলকে অবিহিত করা হয়েছে। এখন সেন্টমার্টিনে পণ্য পাঠানোর জন্য বঙ্গোপসাগরই ভরসা কি না দেখা হচ্ছে।

পাঠকের মতামত

বিটিভি’র “নতুন কুঁড়ি ২০২৫”-এ উখিয়ার তিন শিক্ষার্থীর দুর্দান্ত সাফল্য

মুজিবুর রহমান:: বাংলাদেশ টেলিভিশন ও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত শিশু-কিশোরদের প্রতিভা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা ...

রোহিঙ্গা সংকটযুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য অনুদান কমানোয় বাংলাদেশের ঋণ ৪০০ মিলিয়ন

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র গত বছর অনুদান দিয়েছিল ৩০০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু চলতি ...

সীমান্তবর্তী প্রতিটি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবো: শাহজাহান চৌধুরী

কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক সাংসদ ও হুইপ জননেতা শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, ক্লাসে ন্যূনতম ৭০ ...

১ নভেম্বর থেকে খুলছে সেন্টমার্টিন, তবে ডিসেম্বর পর্যন্ত রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ

সেন্টমার্টিন দ্বীপ পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে আগামী ১ নভেম্বর থেকে। পর্যটন মৌসুম চলবে ফেব্রুয়ারি ...